দীপাবলি সংখ্যা
এক রূপকথারই দেশ
লেখক : সোমা ব্যানার্জী
ছোট্ট থেকেই বইপত্রের ওপর অসম্ভব একটা আকর্ষণ তুতুনের। বাবাও নাকি বই পড়তে খুব ভালোবাসত! সে যখন এক বছরের তখন বাবা চিলেকোঠার বইয়ের ঘরটায় বসে বই পড়ছিল। পুরোনো বই কাগজ কিনতে একটা লোক এসেছিল, তার কাছে একটা বই কিনেছিল সেদিন সকালেই। দুপুর বেলা মা খেতে ডাকতে এসে দেখে, ওমা কি অদ্ভুত কান্ড! ঘরের সব যেমন কার তেমনটি রয়েছে।
বইখানা টেবিলের ওপর খোলা পড়ে। শুধু বাবা কোত্থাও নেই। নেই তো নেই। পুলিশ এলো। কিন্তু নাহ, বাবাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি। ভোজবাজির মতো যেন উবে গিয়েছিল তার বাবা। সেই থেকে এই ঘরটা। তুতুনের খুব কৌতূহল হয় ওই ঘরটায় ঢুকে দেখার। পুরোনো চাবি ঘুরিয়ে তালা খুলে ফেললো সে। ওই তো টেবিলের ওপর সেই পুরোনো বইটা সেইভাবেই খোলা রাখা আছে। ঝুঁকে বইটা দেখছিল সে, বসে পড়তে শুরু করলো। পড়তে পড়তে ডুবে যাচ্ছিল সে স্বপ্নের দেশে।
কি সুন্দর সোনালী ফুলের গাছ। তিরতির করে ঝর্ণার নীল জল বইছে। কুলকুল শব্দ। চিলেকোঠার ঘরটা এখন পুরোনো সোনালী রঙা এক প্রাসাদ। সেই স্বপ্নপুরীতে ঘুরতে ঘুরতে বাবার সঙ্গেও দেখা হয়ে গেল তার।
মা’র আকুল ডাক শুনতে পাচ্ছে তুতুন। কিন্তু সে এখন আর তো যেতে পারবে না। সেও এখন বাবার পাশে বসে সেই নতুন রূপকথার দেশে। স্বপ্নপুরী থেকে নাকি আর ফেরা যায় না!