অনুগল্প মালবিকা
ঘড়িতে গুনে গুনে দশটার ঘন্টা পড়ল।মালবিকার ভুরু কুঁচকে গেল। সকাল দশটা বাজল। বউমা তো এখনও ওর ঘর থেকে বেরোল না! নিশ্চই ঘুমোচ্ছে। প্রাঞ্জল দু'দিন হল অফিসের ট্যুরে বাইরে। মেয়েটা দ্বিতীয় দিনেই শাশুড়িকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেলা করে ঘুমোচ্ছে!সংসারের এতো কাজ কে করবে!বিয়ের তিনমাস যেতে না যেতেই এতো অবাধ্যতা!
মালবিকা বউমার ঘরের দরজায় সশব্দে টোকা দিল। দরজা খোলাই ছিল। শুনল শিঞ্জিনী ভেতর থেকে ক্লান্তস্বরে বলছে - মা, ঘরে এসো।
মালবিকা ঘরে ঢুকে দেখল শিঞ্জিনী বিছানায় শুয়ে। মুখটা যন্ত্রনাকাতর। ক্ষীণস্বরে বলল - তলপেটে খুব ব্যথা হচ্ছে গো!ওষুধ খেয়েছি। একটু সামলে উঠে জলখাবার বানাতে যাব।অসুবিধা হবে?
মালবিকার বুকটা মুচড়ে উঠল। মনে পড়ল তার বড় মেয়ে সুজাতাও বিয়ের আগে এমন মেয়েলী সমস্যায় জেরবার হত। সেসময়ে মালবিকা মেয়ের সেবা করত। এখন কে তাকে যত্ন করে কি জানি!
মুহূর্তে মালবিকার মধ্যে মাতৃসত্ত্বা জেগে উঠল। সস্নেহে বউমাকে বলল – সেকথা তো আগে বলতে হয় মা! আজ সারাদিন বিশ্রাম নাও। সংসারের সব কাজ না হয় আমি করছি।
শিঞ্জিনী মুগ্ধ হয়ে শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে রইল।তার কল্পনায় তখন শাশুড়ি আর নিজের মায়ের মুখ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।আদুরে গলায় বলল – সেরে উঠি। তারপর আজ সন্ধ্যায় চপ মুড়ি খেতে খেতে আমরা কিন্তু লুডো খেলব। বিয়ের আগে মায়ের সঙ্গে এমনটাই করতাম।
মালবিকা হেসে বউমার কপালের চুলগুলো যত্ন করে গুছিয়ে দিয়ে বলল – পাগলী মেয়ে একটা। ঠিক আছে, তাই হবে।
Copyright © 2022 Rupkatha Live. All Rights Reserved. Powered by : Technotrick Systems.