নববর্ষ সংখ্যা
হারিয়ে গেল মেয়েবেলা
লেখক : সুশান্ত পাড়ুই
ছোট্ট একটা মেয়ে
যাচ্ছিল নাও বেয়ে
জ্যোৎস্না রাতে চাঁদকে দেখে দেখে,
হঠাৎ একি নিঝুম দুপুর
সামনে দেখি নিভন্ত-পুর
চাঁদকে পেড়ে সূর্য দিল এঁকে।
ধুলোয় পড়ে রইলো পুতুল খানি
রক্তে রাঙা মলিন জামা জানায়
বললে সবাই চুপ কর মা
এই বয়সে কান্না কি তোর মানায়!
পরিয়ে দিল শাড়ি
মেয়েবেলা শেষ হলো তোর
এখন থেকে তুই যে হ'লি নারী।
ছিঁড়লো বীণার তার
গান কি হবে আর!
সাধের পুতুল, আচার চুরি
রইলো পড়ে, সামনে কাঁটাতার।
পরিয়ে দিল শাঁখা সিঁদুর
ঘোমটা পরা অশ্রুবিঁদুর
আজ থেকে তুই অন্য ঘরের বধূ,
এখানে তুই কন্যে ছিলিস
নিজের ঘরে নিজেই বিলিস
কে বোঝে তার মনের মরু-ধুধু।
পুকুর ঘাটে সাঁতার মানা
চার দেয়ালে তার সীমানা
ইহকালের এ আস্তানা
অদৃশ্য এক বাঁধলো বেড়ি পা'য়,
বিষের বাঁশি ডাকছে হাসি
আবছা আঁধার ছায়।
টাপুর-টুপুর আলোর দুপুর
তার কি হৃদয়পুর সাজায়
নীরব ভাষার কী রব হাসার
গদ্য খাতায় মূর্ছা যায়।
সেই যে সাধের স্কুল-বাড়ি টা
খেঁজুর পাতার ফুল-গাড়ি টা
সবার সাথে আড়ি,,
সেসব এখন অস্তাচলে
এখন সে যে নারী!
মনের কথা রইলো মনে
কাঁদবে চুপিসারে
শাঁখা নোয়া সিঁদুর টিপ-এ
বাঁধা এ সংসারে।
বাতাস বলছে কানে
সমাজ সবটা জানে
এইখানেতেই এই জীবনের সবটা দাঁড়িটানা,
হারিয়ে গেছে মাড়িয়ে সে পথ
একলা তরীখানা ।